শিক্ষার্থীদের আর্থিক লেনদেন সহজ করতে এবং তাদেরকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করতে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট অফার করে। এ ধরনের অ্যাকাউন্টগুলো সাধারণত কম খরচে পরিচালনা করা যায় এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়।

**স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টের সাধারণ বৈশিষ্ট্য:**

* **কম বা শূন্য ন্যূনতম ব্যালেন্স:** বেশিরভাগ স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং চালু রাখতে খুব কম বা কোনো ন্যূনতম ব্যালেন্সের প্রয়োজন হয় না।
* **কম বা মওকুফ ফি:** অ্যাকাউন্ট মেইনটেনেন্স ফি, এটিএম ফি, এসএমএস ব্যাংকিং ফি ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই কমিয়ে বা সম্পূর্ণ মওকুফ করে দেওয়া হয়।
* **সুদের সুবিধা:** কিছু ব্যাংক স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত টাকার উপর সুদ প্রদান করে, যা শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
* **ডেবিট কার্ড:** প্রায় সব ব্যাংকই স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টের সাথে ডেবিট কার্ড প্রদান করে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই টাকা উত্তোলন, কেনাকাটা এবং অনলাইন লেনদেন করতে পারে।
* **অনলাইন ব্যাংকিং:** স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টধারীরা অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স চেক করা, বিল পরিশোধ করা, টাকা ট্রান্সফার করা ইত্যাদি কাজ করতে পারে।

**বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় ব্যাংকের স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট:**

* **Dutch Bangla Bank (DBBL) - DBBL School Savers Account:** ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য।
* **AB Bank - Student Account:** আকর্ষণীয় সুদের হার এবং ডুয়েল কারেন্সি ডেবিট কার্ড সুবিধাসহ।
* **BRAC Bank - Future Star Account:** ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য, বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স সুবিধাসহ।
* **Eastern Bank Limited (EBL) - EBL Junior:** ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য, বিশেষ সুবিধা এবং গিফটসহ।

**স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার যোগ্যতা:**

* **বয়স:** সাধারণত ১৬ থেকে ২৫ বছর।
* **শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নামভর্তি:** স্বীকৃত স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
* **প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:** 
    * ছাত্র পরিচয়পত্র
    * অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র
    * ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমনঃ ইউটিলিটি বিল, ভোটার আইডি কার্ড)
    * পাসপোর্ট সাইজের ছবি

**কিভাবে স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলবেন:**

1. **ব্যাংক নির্বাচন:** আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট কোন ব্যাংকে আছে তা খুঁজে বের করুন।
2. **ব্যাংকে যোগাযোগ:** আপনার পছন্দের ব্যাংকের নিকটস্থ শাখায় যান বা অনলাইনে আবেদন করুন।
3. **প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন:** ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন।
4. **অ্যাকাউন্ট খোলা:** ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন যাচাই করে অ্যাকাউন্ট খুলে দেবে।

**স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টের সুবিধা:**

* সহজে আর্থিক লেনদেন করা যায়।
* আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জন করা যায়।
* সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
* বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়।

**মনে রাখবেন:** স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার আগে বিভিন্ন ব্যাংকের অফারগুলো ভালোভাবে তুলনা করে দেখুন এবং আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী অ্যাকাউন্টটি নির্বাচন করুন।